যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্ব আরো গভীর করতে আগ্রহী।
তিনি বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তারা একটি ‘ফলপ্রসূ’ বৈঠক করেন।
এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায্য শ্রম চর্চা এবং মানবিক সহযোগিতা বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানকে ধন্যবাদ। আমি আমাদের শক্তিশালী অংশীদারিত্বকে আরো গভীর করতে আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া ১১ থেকে ১৪ জুলাইয়ের সফরে মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও ইউএসএইডের এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর প্রতিনিধি দলে থাকবেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বৃহস্পতিবার বলেছেন, জেয়া তুলনামূলকভাবে একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা এবং তার আওতাধীন কাজের ক্ষেত্র বেশ বিস্তৃত।
তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সফরকালে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় ছাড়াও বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। নির্বাচনী ইস্যুগুলো অন্যতম ইস্যু হিসেবে আলোচনায় আসতে পারে। আমরা এটা উড়িয়ে দিচ্ছি না।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মানবাধিকার, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, বাণিজ্য, শ্রমসহ পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য বিষয় আলোচনায় আসবে।
মোমেন বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দল শুধু নির্বাচনী ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে আসছে এমন কোনো তথ্য তার কাছে নেই, তবে এটি দুই দেশের বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা।
২০২২ সালের ১৯ থেকে ২৩ মার্চ আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের ওয়াশিংটন সফরসহ সাম্প্রতিক অতীতে ওয়াশিংটন থেকে বেশ কয়েকটি সফর হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে লু বাংলাদেশ সফর করেন। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ নীতি নির্ধারণে তিনি ব্যাপকভাবে জড়িত রয়েছেন।
গত ২৫ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তনি ব্লিঙ্কেন আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর লু এই পদক্ষেপের প্রকাশ্যমুখ হিসেবে আবির্ভূত হন।
এদিকে, মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, উজরা জেয়ার নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধি দলের এই সফর মূলত দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে এবং যোগাযোগ আরো জোরদার করার একটি প্রচেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের ব্যস্ততা ছাড়াও রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন।
গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে, সার্বজনীন মানবাধিকারকে এগিয়ে নিতে, শরণার্থী ও মানবিক ত্রাণকে সমর্থন করতে, আইনের শাসন ও মাদকবিরোধী সহযোগিতা, দুর্নীতি ও অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে, সশস্ত্র সংঘাত রোধ করতে এবং মানব পাচার নির্মূলে বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেন জেয়া।