একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা নিয়ে করা মামলার বিষয়টি আওয়ামী লীগের একটি ‘সাজানো নাটক’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশ মিছিলের পিছনে ককটেল মেরে, আবার আমাদের মিছিলে হামলা করেছে। সরকার ছাত্রলীগের হাতে আবার অস্ত্র তুলে দিয়ে আগের মতই খেলা খেলছে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এর আগে আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে দলের অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, হবিগঞ্জে বিএনপি নেতা জিকে গউছের বাসায় আগের দিন পুলিশ এবং পরের দিন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এমনকি পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর তিন শ’ রাউন্ডেরও বেশি গুলি চালিয়েছে। নারায়ণগঞ্জেও তারা একই অবস্থা করেছে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার এমন একটি ঘটনা ঘটাতে চাচ্ছে , ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যেভাবেই হোক বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নিশ্চিহ্ন করা যায়। যেভাবে আগের মত করে ভোট করে ক্ষমতায় থাকা যায়। সেই লক্ষ্যই সরকার এগোচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করতে চায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি নয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না, যা হচ্ছে মেগা প্রকল্প মেগা প্রজেক্টে। ইতোমধ্যে অনেক প্রকল্পের উদ্বোধন করে যাচ্ছে তারা। এগুলো কার জন্য, কিসের জন্য? এগুলো শুধু তাদের পকেট ভরার জন্য।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারা দাবি করে এগুলো তারা করছে। এগুলো কার টাকায় করছে? জনগণের ট্যাক্সের টাকায়। এই টাকার শতকরা ৮০ ভাগ তারা চুরি করে নিয়ে যায়। বাকি ২০ ভাগ টাকায় তারা কাজ করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মূল কথা- এদেশের মানুষ ভোট দিতে চায়, গণতন্ত্র চায়। তারা তাদের ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়। দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে চায়।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার বিষয়ে এক প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, বিষয়টি আওয়ামী লীগের একটি সাজানো নাটক। যেখানে মিটিং হওয়ার কথা ছিল সেখানে না করে অন্য জায়গায় তারা মিটিং করেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে তিনবার এফআইআর ছিলই না। তারেক রহমানের নাম কোনো তদন্তে উচ্চারিত হয়নি। একমাত্র মুফতি হান্নানকে দিয়ে ১৪৫ দিন তাকে আটক করে রিমান্ডে নেয়ার পর তাকে দিয়ে জোর করে কথা বলানো হয়েছিল। পরে কিন্তু তিনি আবার একথা বলেননি, অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু তার এই কথা আমলে নেয়নি। তিনি যাতে কোর্টে না যেতে পারেন সেজন্য তড়িঘড়ি করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, কোন দেশ কী বলল, সেটা তাদের বিষয়। আওয়ামী লীগের মতো আমরা তো রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হইনি। তাদের রাজনৈতিক ভিত্তি নেই? আমাদের ভিত্তি আছে বলেই জনগণকে সাথে নিয়ে রাজনীতি করছি। এগিয়ে যাচ্ছি। ইনশা আল্লাহ, বাংলাদেশে মানুষ কখনো ব্যর্থ হয়নি। এবারো ব্যর্থ হবে না।
বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্যান্যবারের মতো আগামী ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সময় মতো আলোচনা সভা করা হবে। পোস্টার প্রকাশ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করা হবে। বিস্তারিত কর্মসূচি আজ সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনায় চূড়ান্ত হবে।