আমতলী উপজেলা সংবাদদাতাঃ  বরগুনার আমতলীতে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ২২ নভেম্বর শুক্রবার রাতে পৌর শহরের বটতলা বাস স্ট্যান্ডে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাহিত্য সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার আমতলী উপজেলা প্রতিনিধি এইচএম রাসেল সন্ত্রাসী হামলার স্বীকার হয়েছে।

আহত সাংবাদিক রাসেলকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ মনিরুজ্জামান খাঁন দ্রুত তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মনিরুজ্জামান খাঁন বলেন, আহত সাংবাদিক রাসেলের মাথা, বাম হাতের আঙ্গুল ও পায়ে গুরুতর জখম হয়েছে। আহত দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।

জানাগেছে,আমতলী পৌর শহরের বটতলা বাস স্ট্যান্ড শুক্রবার রাতে বিএনপি থেকে মোঃ জালাল উদ্দিন ফকিরের ছোট ছেলে রাহাত ফকিরের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা বাস স্ট্যান্ডে তান্ডব চালিয়ে ৮ টি কাউন্টার ভাংচুর করে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ওই তান্ডবের ছবি আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন সাহিত্য সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার আমতলী উপজেলা প্রতিনিধি এইচএম রাসেল ভিডিও ধারণ ও ছবি ধারন করছিল। ওই সময় পিছন দিক থেকে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সাংবাদিক রাসেলকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে রাসেলের মাথায় ও হাতের একটি আঙ্গুলে গুরুতর জখম হয়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিক রাসেলের এন্ড্রয়েড মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। তাকে রক্ষায় জনি গাজী এগিয়ে গেলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা গুরুতর আহত রাসেল ও জনি গাজীকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।

এ ঘটনায় আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন শনিবার প্রতিবাদ সভা করেছে। আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার স্টাফ রিপোটার মোঃ জসিম উদ্দিন সিকদার সভায় সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমতলী প্রেসক্লাব সভাপতি অ্যাড. শাহাবুদ্দিন পান্না। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাসস বরগুনা জেলা প্রতিনিধি একেএম খায়রুল বাশার বুলবুল, আমতলী প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক অ্যাড, সৈয়দ নুহু-উল আলম নবীন, উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি এম সাইদ খোকন। আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ হোসাইন আলী কাজীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ইউনিয়ন সাবেক আহবায়ক পরিতোষ কর্মকার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নুল আবেদীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচএম কাওসার মাদবর , চ্যানেল আমতলীর পরিচালক সাইফুল্লাহ নাশির, প্রেসক্লাব সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নাশির মাহমুদ, সাংবাদিব ক্লাব সভাপতি সুমন রশিদ, উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সজিব আহমেদ, নারী সাংবাদিক নাসরিন শিপু, মনিরুজ্জামান মনির, ইকবাল তালুকদার, মাহবুব বিশ্বাস টিটু, রিপন মুন্সি, রাসেমুল হক রিমন ও পিএম সাজ্জাদ শরীফ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিএনপি থেকে বহিস্কৃত জালাল আহমেদ ফকিরের ছোট ছেলে রাহাত ফকিরের নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বাস স্ট্যান্ডে তান্ডব চালায়। তারা আরো বলেন, সন্ত্রাসীরা বাস স্ট্যান্ডের ৮ টি কাউন্টার ভাংচুর করে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় সাংবাদিক ভিডিও ধারন ও ছবি তুলতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে আহত করেছে।

আহত সাংবাদিক এইচএম রাসেল বলেন, বাস স্ট্যান্ড দখলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও ধারন ও ছবি তুলতেছিলাম। এ সময় পিছন থেকে সন্ত্রাসীরা এসে আমাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমি এ ঘটনার শাস্তি দাবী করছি।

আমতলী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মইনুদ্দিন মামুন বলেন, বটতলা বাস স্ট্যান্ডে গন্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি বাস কাউন্টারগুলোর সাটার বন্ধ।

বিএনপি থেকে বহিস্কৃত জালাল আহমেদ ফকির বলেন, ওই স্থানে কি হয়েছে আমি জানিনা। আমি একটি সালিশীতে ছিলাম। ঘটনার খোজ খবর নিয়ে দেখি কি হয়েছে?

আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা বলেন, লোকজন টাকা পয়সা দিয়ে কাউন্টার এনে ব্যবসা করছে তাতেও তারা হামলা করছে। বিএনপি এমন কর্মকান্ডকে প্রশ্রয় দেয় না। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।

আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুর রহমান আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সাংবাদিক আহতের ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।