বরগুনাবরিশাল

বরগুনার বেতাগীতে গরু চুরি ঠেকাতে রাত জেগে কৃষকের পাহারা, ডাকাত আটক

বরগুনার বেতাগীতে গরু চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। বেপরোয়া হয়ে উঠেছে গরু চোরের সিন্ডিকেট। গত এক সপ্তাহে বেতাগীর বিভিন্ন স্থানে ৯-১০টি গরু চুরির খবর পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে আটকও হয়েছে ডাকাত দলের সদস্য। যদিও এ সকল অনৈতিক কার্যক্রম রোধ করতে রাত দিন উপজেলার বর্ডার এলাকাসহ পশুরহাটে টহল দিচ্ছেন বেতাগী থানা পুলিশের কয়েকটি টিম। তারপরও যেনো পশুপালনকারী ও খামারীদের দুশ্চিন্তা কমছে না।

জানা যায়, বেতাগী উপজেলার পৌরশহর ও সাতটি ইউনিয়নে ছোট-বড় শতাধিক খামারে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে বিক্রির উদ্দেশে প্রায় পাঁচ শতাধিক পশু পালন করা হয়েছে। তবে বরগুনা-বরিশাল মহাসড়কের পাশাপাশি, বিষখালী নদীর পাড়ে বেতাগী উপজেলা অবস্থিত হওয়ায় খামারীদের মনে প্রতিবছরই চোর-ডাকাতের আনাগোনাই বড় দুশ্চিন্তা। বৃহস্পতিবার রাতে বিষখালী নদীতে জেলেদের মাছ ধরার সময় চোখে পড়ে দ্রুত গতিতে একটি ট্রলার বেতাগী শহরের দিকে ছুটে আসছে। সন্দেহ হলে তারা থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের চেষ্টায় ট্রলার থামাতে গেলে বিভিন্ন ভাবে বেশ কয়েকজন সদস্য পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল (ট্রলার) থেকে একজনকে আটক করা হয়। এ সময় দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র (ধারালো চাপাতি, সিকল কাটার করাত ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দড়িসহ) চুরি-ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত নানা সরঞ্জামাদী জব্দ করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে বেতাগীর বিভিন্ন এলাকার খামারীদের মনে পশু চুরির আতঙ্ক বেড়েই চলছে।

মোকামিয়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, ‘বিষখালী নদী আমাদের বাড়ি থেকে এক মিনিটের পথ। কোরবানীতে বিক্রির জন্য গোয়াল ঘরে যা ছিল, তারপরও ১৩টা গরু ও ছয়টা ছাগল কিনেছি, সব মিলিয়ে প্রায় ২৫টা পশু আমার খামারে। চুরি ডাকাতি হয়। তবে ১০ লাখ ওপরে ক্ষতি হবে। লোন নিয়ে ব্যবসায় নামছি। একদম পথে বসে যাব।

এলাকার একাধিক খামারিরা বলেন, বেতাগীতে ডাকাত আসছে শোনার পর থেকে একটুও ঘুমাই না। রাত জেগে পাহাড়া দেই। ঘরের সবাই মিলে পযার্য়ক্রমে রাতভর পাহারা দেই।

বদনীখালী এলাকার রাজ্জাক বলেন, ‘খুব ভয়ের মধ্যে আছি। ধারদেনা করে খামারে পশু কিনছি দুই টাহা লাভের আশায়। চুরি ডাকাতি হয়। তবে তো ধারের টাকা শোধের বদলে এলাকা ছেড়ে যাওয়া লাগবে।

তিনি আরো বলেন, ‘কোরবানীর পশুর হাট-বাজারের শেষের দিকে পশু বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যাবে এমনটা ভাবছিলাম। কিন্তু চোর-ডাকাতের যে পরিমাণ আনাগোনা, তাতে আগেই বিক্রি করে মানুষের ধারদেনা দিয়া দিমু। মোর লাভ লাগবেনা!

বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ও স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছি। ট্রলারে থাকা বাকি সদস্যরা পালিয়ে যায়। তাদের গ্রেফতার করার জন্য আমাদের কার্যক্রম এখনো অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি পশুরহাটে দিনের বেলা পুলিশের টহল সক্রিয়ভাবে আছে এবং রাতে গুরুত্বপূর্ণ স্পট (বর্ডার এলাকায়) চেকপোস্ট ও খেয়াঘাটে পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট খবরগুলো

চাইলে পড়তে পারেন
Close
Back to top button