বরিশাল

বরিশালে বাস টার্মিনাল দখল নিয়ে আ’লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০

বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ দখল নিয়ে বর্তমান মেয়র সাদিক ও নবনির্বাচিত মেয়র খোকন অনুসারী শ্রমিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (২১ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে সদ্য গঠিত মহানগর শ্রমিক লীগের কমিটিতে পদবঞ্চিত খোকন অনুসারী শ্রমিক নেতা আফতাব হোসেনের নেতৃত্বে শ্রমিকরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এরপরই শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের দাবিতে টার্মিনালের মধ্যে প্রবেশ করেন সাদিক অনুসারী শ্রমিক নেতা কালাম হোসেন লিটন মোল্লা। এ সময় বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি ও মহানগর শ্রমিক লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি খোকন সমর্থিত আফতাব হোসেনের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে সাদিক অনুসারী শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করলে ফের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হামলাকারী আফতাব অনুসারীদের ওপর পাল্টা হামলা চালিয়ে তাদেরকে মারধর করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। শ্রমিকরা নথুল্লাবাদ টার্মিনালের ভেতরে বেশ কয়কটি টিকিট কাউন্টার ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। সংঘর্ষে দুই গ্রুপের অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হন।

প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ থাকার পর প্রশাসনের অনুরোধে তা তুলে নেয়া হয়। এসময় চরম দুর্ভোগে পরেন দুরপাল্লা ও অভ্যন্তরিণ রুটের যাত্রীরা। বর্তমানে টার্মিনাল এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যকে।

খোকন অনুসারী শ্রমিক নেতা আফতাব হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের বিতর্কিতদের দিয়ে মহানগর শ্রমিক লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা ওই কমিটির বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ জানালে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় সাদিকপন্থী লোকজন।

সাদিক অনুসারী একাংশের শ্রমিক নেতা লিটন মোল্লা বলেন, আমরা শ্রমিক লীগের কমিটির বিষয় নিয়ে এখানে আসিনি। আমরা বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহণ (বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস) শ্রমিক ইউনিয়নে নির্বাচনসহ ছয় দফা দাবি জানাতে টার্মিনালে এসেছি। কিন্তু কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আফতাব হোসেন ও তার লোকেরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। আমরা এই ঘটনার বিচার দাবি করছি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আলী আশ্রাফ ভূঁইয়া বলেন, দুই পক্ষের শ্রমিকদের বাস টার্মিনাল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। নথুল্লাবাদের পরিস্থিতি পুরোপুরি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাছাড়া টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগের ২৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি গঠনের সংবাদ শুক্রবার প্রকাশ হওয়ার পর বিক্ষোভ করে পদবঞ্চিত খোকন অনসুারীরা। এই কমিটির সভাপতি করা হয় সাদিক অনুসারী পরিমল চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক হন রইজ আহম্মেদ মান্না। কমিটির অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ পদ সাদিক অনুসারীদের দখলে থাকায় পদবঞ্চিতরা সকালে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে বিক্ষোভ-অবরোধ করলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট খবরগুলো

Back to top button