বরগুনার পাথরঘাটায় কবির হোসেন খান নামের এক ব্যক্তি ও তার স্ত্রী বিলকিস বেগমের হাত-পা ও চোখ বেঁধে কুপিয়ে যখম করে ডাকাতি হয়েছে। এ সময় ডাকাতদের চিনে ফেলায় এবং তাদের ডাকাতিতে বাধা দিলে কবির হোসেনকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে বিছানায় ফেলে রাখেন ডাকাত দল। ডাকাত দল চলে গেলে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাদের অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
রোববার দিনগত রাত ১টা থেকে আড়াইটার মধ্যের কোনো একসময় এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতির সময় কবিরের স্ত্রী বিলকিস ও দুই শিশু সন্তান তানভির (১১), তামিম (৬) আহত হয়।
কবির হোসেন উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের কালিবাড়ি এলাকার মো. ফুল মিয়া খানের ছেলে। তিনি গার্মেন্টস শ্রমিকের কাজ শেষে বাড়িতে এসে গরুর খামার চালু করেছেন।
কবিরের স্ত্রী বিলকিস বেগম ও বাবা ফুল মিয়া খান বলেন, প্রতিদিনের মতো খামারের কাজ শেষে রাতে ঘরের সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। রাত অনুমানি দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যের কোনো একসময় সিধকেটে ঘরে প্রথম আমার স্বামীর বিছানায় যায়, কিছুক্ষণ পর আমার স্বামীর চিৎকার শুনে আমি তাকে রক্ষা করতে যেতে চাইলে আমার চোখ বেঁধে স্বামী কবির হোসেনকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় আমাকে ও আমার দুই ছেলেকে মারধর করে বেধে রাখে। ডাকাতরা আমাদেরকে বেঁধে ঘরের থাকা নগদ দু’লাখ ৪০ হাজার, কানের দুল দুই জোড়া, একটি চেইন, একজোড়া হাতের চুরি, হাতের আংটি দুটি, রুপার নূপুর এক জোড়া নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ ডাকাতদল।
তিনি আরো বলেন, ঘরের মধ্যে তিনজন লোক ছিলো, তাদের মধ্যে একজন অন্যজনকে বলছিল যে ‘ভালো করে চোখ ও কান বেঁধে রাখো। না হয় চিনে ফেলবে। চিনে ফেললে একজনও বাচতে পারবি না।’ এছাড়াও তাদের সাথে ঘরের বাইরেও আরো অনেক লোক ছিলো। ডাকাতদল চলে গেলে আমি আমার শ্বশুরকে ডেকে নিয়ে এলে তার মাধ্যমে স্থানীয়রা এলে আমার তারা স্বামীকে অচেতন অবস্থায় পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওখান থেকে বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় ইউনুস মিয়া জানান, রাত ২টার দিকে কবিরের স্ত্রীর চিৎকার শুনে আমরা বাপ বেটা দৌড়ে কবিরের বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি কবির রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে এবং তার বিছানায় শরীরের কিছু হাড়ের অংশ পড়ে রয়েছে।
কবিরের বাবা ফুল মিয়া খান বলেন, আমার ছেলেকে এমনভাবে কোপানো হয়েছে জানি না বাঁচবে কিনা। আমরা আইনের আশ্রয় নিবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান তরিকুল ইসলাম পিন্টু মুন্সি বলেন, আমরা ডাকাতির কথা শোনা মাত্রই ওই বাড়িতে গিয়ে ডাকাতির আলামত পেয়েছি। কবিরের মাথায়, হাটুসহ একাধিক জায়গায় কোপানো হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক অবস্থায় বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
পাথরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হয়েছে। তার মাথায় হাঁটুসহ একাধিক জায়গায় কোপানো হয়েছে, তার অবস্থা গুরুতর। শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) আবু জাফর সালেহ বলেন, ডাকাতি হয়েছে, আমরা ঘটনাস্থলে আছি। তদন্ত চলছে।