এইচ এম রাসেল, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
তালতলী উপজেলার কমডেকা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ মাসুম বিল্লাহকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখমের ঘটনায় শুক্রবার রাতে তালতলী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ’র বাবা ইউসুফ মোল্লা বাদী হয়ে নারী ইউপি সদস্য নুপুর আক্তারের স্বামী মোঃ মনোয়ার সিকদারকে প্রধান আসামী করে সাত জনের নামে হত্যা চেষ্টা মামলা করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবীতে শনিবার দুপুরে তালতলী উপজেলার শিক্ষকরা প্রতিবাদ সভা করেছেন। ওই প্রতিবাদ সভায় আগামী রবিবার প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের ন্যায্য মুল্যের চাল বিতরনের সুবিধার্থে ডিলার হারুন তালুকদার ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান গাবতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিতরনের উদ্যোগ নেয়। বৃহস্পতিবার ওই চাল বিতরন কালে নারী ইউপি সদস্য নুপুর আক্তারের স্বামী মনোয়ার সিকদার ও তার লোকজন চাল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। একই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোঃ জাহিদুল ইসলাম মোল্লাসহ গাবতলী গ্রামের লোকজন এতে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় কমডেকা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ মাসুম বিল্লাহ দুই পক্ষকে শান্ত করে ঘটনা মিমাংশা করে দেন। কিন্তু মনোয়ার সিকদার ও তার লোকজন এতে শান্ত হয়নি। ওইদিন বিকেলে শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ ছোটবগী বাজারে গেলে নারী ইউপি সদস্যের স্বামী মনোয়ার সিকদার তার সহযোগী কামরুল, আলমগীর সিকদার ও জহিরুল মোল্লা, বেল্লাল, রফিক সিকদার ও জব্বার প্যাদা তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ বর্তমানে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে শিক্ষক মাসুম বিল্লাহের বাবা ইউসুফ মোল্লা বাদী হয়ে তালতলী থানায় নারী ইউপি সদস্য নুপুর আক্তারের স্বামী মনোয়ার সিকদারকে প্রধান আসামী করে সাতজনের নামে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে শিক্ষক মাসুম বিল্লাহকে পিটিয়ে জখমের ঘটনায় শনিবার দুপুরে তালতলী সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা প্রতিবাদ সভা করেছেন। সভায় ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে উপজেলা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওলানা হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন তালতলী সরকারী কলেজের প্রভাষক মোঃ আব্দুর রহমান, জাফর মিয়া, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ জামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহীদুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আহবায়ক মোঃ কামাল হোসেন, আব্দুল মজিদ জোমাদ্দার, প্রধান শিক্ষক মোঃ মোশাররফ হোসেন ডাকুয়া ও শিক্ষক মিজানুর রহমান মোল্লা প্রমুখ।
আহত শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ’র বাবা ইউসুফ মোল্লা বলেন, আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারী ইউপি সদস্য নুপুর আক্তারের স্বামী মনোয়ার সিকদার, তার সন্ত্রাসী বাহিনী কামরুল, আলমগীর সিকদার, জহিরুল মোল্লা, রফিক সিকদার, জব্বার প্যাদা ও বেল্লাল আমার ছেলেকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। এ ঘটনায় তালতলী থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবী করছি।
তালতলী উপজেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওলানা হারুন অর রশিদ বলেন, একজন শিক্ষককে সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে জখম করবে এটা মেনে নেয়া যায় না। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে শিক্ষকরা প্রতিবাদ সভা করেছেন। ওই প্রতিবাদ সভায় ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রæত গ্রেপ্তার করতে উপজেলা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামীকাল রবিবার উপজেলা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন. দ্রæত জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে আমরা কঠোর কর্মসুচী গ্রহন করবো।
তালতলী থানার ওসি কালাম খাঁন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত আছে।