ভোলার মেঘনা নদীতে রোববার (২৫ ডিসেম্বর) ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল সহ জাহাজ ডুবে গেছে। এতে জাহাজের তেল নদীতে ছড়িয়ে ইলিশের অভয়ারণ্যসহ জীবৈচিত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন পরিবেশ ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা
তারা বলছেন, তেল ছড়িয়ে পড়ায় মেঘনার বিশাল একটা এলাকার পানি দূষিত হয়ে পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে বিপর্যয়ের হাত থেকে পরিবেশ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা কে এম শাফিউল কিঞ্জল বলেন, গতকাল বিকেল ৫টা থেকে সারারাত তেল উত্তোলন অব্যাহত আছে। এখনো তেল উত্তোলন চলছে। উত্তোলন করা তেল একটি বলগেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে তেল কিছুটা ছড়িয়ে পড়লেও তা বড় আকারের নয়। আমরা তেল পানি সহ উত্তোলন করছি। আরও কিছু মেশিনারি এসে পৌঁছালে পানি থেকে তেল আলাদা করে উত্তোলন করা সম্ভব হবে।
ভোলার পরিবেশবিদ অ্যাডভোকেট নজরুল হক অনু জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে যে পরিমাণ তেল ছড়িয়ে পড়েছে তা জীববৈচিত্র্য এবং জেলেদের জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাই খুব দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের দাবিও করেছেন তিনি।
তবে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের কর্মকর্তা লেফটানেন্ট রিদম জানিয়েছেন, ছড়িয়ে পড়া তেলের পরিমাণ খুব কম এবং তেল যেনো নদীতে ছড়িয়ে পড়ে জীববৈচিত্র্যে কোন প্রভাব ফেলতে না পারে সেজন্য ল্যামার সংযোজিত অত্যাধুনিক বোট ব্যবহার করছেন তারা।
এছাড়া ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, যাতে পরিবেশ বিপর্যস্ত না হয় সেজন্য জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডসহ স্থানীয় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। আগামীকালের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেও আশা তার। তেলবাহী জাহাজ সাগর নন্দিনী-২ এর এই দুর্ঘটনায় পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের অন্তত ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
উল্লেখ, রোববার ভোররাতে ভোলা সদর উপজেলার তুলাতুলি মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে তেলবাহী জাহাজ “সাগর নন্দিনীর” সঙ্গে নোঙর করা আরেকটি জাহাজের সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষে সাগর নন্দিনী জাহাজটির পেছনের তলা ফেটে তা পানিতে নিমজ্জিত হয়। জাহাজে থাকা মাষ্টারসহ ১৩ নাবিককে জীবিত উদ্ধার করে কোষ্টগার্ড।