মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
spot_img
প্রচ্ছদঅর্থনীতিহাজার টাকার কাঁচা মরিচ এখন ১৬০-২৫০ টাকা

হাজার টাকার কাঁচা মরিচ এখন ১৬০-২৫০ টাকা

ঈদের ছুটি শেষে খুলছে দেশের স্থলবন্দরগুলো। গত কয়েকদিন ধরে কাঁচামরিচের অগ্নিমূল্যের জেরে গতকাল রোববার (২ জুলাই) থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। আমদানির খবরেই কমতে শুরু করে কাঁচা মরিচের দাম।দুই সপ্তাহ আগেও রাজধানীতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। কয়েক দিনের ব্যবধানে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। এর পর থেকে দাম কমেনি বরং লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়, এমনকি ১০০০ টাকায় পৌঁছায়। তবে রোববার (২ জুলাই) আমদানির প্রভাবে কাঁচা মরিচের তেজ কমতে শুরু করেছে। মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা।

সম্প্রতি খুচরা বাজারে প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর দাম ১০০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

খুলনা প্রতিনিধি জানান, খুলনার বাজারে ঢুকেছে আমদানি করা ভারতীয় কাঁচা মরিচ। ফলে একদিনের ব্যবধানে দাম কমেছে ৪০০ থেকে ৫০০।

গতকাল রোববার কাঁচা মরিচের দাম ছিল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি। আজ সকাল থেকে বাজার এবং মরিচের মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে। দাম কম হওয়ায় মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।

সোমবার (৩ জুলাই) নগরীর বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সাথেঞ কথা বলে এ তথ্য মিলেছে।

খালিশপুর পৌরসুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, কাঁচা মরিচের মানভেদে দাম কমেছে। আজ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ বিক্রি করছি।

নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, বাজারে ভারতীয় কাঁচা মরিচ এসেছে। এ জন্য দাম কমেছে। আজ সকাল থেকে ২০০ টাকা কেজিতে মরিচ বিক্রি করছি। গতকালও রোববার কাঁচা মরিচ ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি।

নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী কাজী সামসুদ্দীন বলেন, আমদানি করায় বাজারে অনেক কাঁচা মরিচ এসেছে। আমি ১২০ টাকা কেজি দরে ১৫ কেজি মরিচ কিনেছিলাম। বিক্রি করছি ১৬০ টাকা কেজিতে। ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচের দাম নিচ্ছি ৪০ টাকা।

গতকালও ১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। দাম কম হওয়ায় ক্রেতাও বেড়েছে।

খালিশপুর পৌর সুপার মার্কেট কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, কাঁচা মরিচের আমদানি হওয়ায় দাম কমেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা আজ ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে মরিচ বিক্রি করছেন।

নগরীর চিত্রালী বাজারে আসা পারভেজ আলম বলেন, আজ কাঁচা মরিচের দাম কমেছে। প্রতি কেজি ২৫০ টাকা। দাম কমে যাওয়ায় মানুষ ঝাল কিনতে পারছেন। তবে দাম আরো কমলে ভালো হয়।

খালিশপুর হাউজিং বাজারে আসা তসলিমা বেগম বলেন, কাঁচা মরিচের দাম কমেছে। গতকালও ছিল ৬০০ টাকা কেজি। আজ ২০০ টাকা কেজি চাচ্ছে। শুনেছি ভারতীয় কাঁচা মরিচ এসেছে। আরো দাম কমবে।

বরিশাল প্রতিনিধি জানান, বরিশালে এক রাতের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম ৮০০ টাকা থেকে কমে ৩০০ টাকায় এসেছে। এর আগে রোববার রাত পর্যন্ত কাঁচামরিচ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

সোমবার (৩ জুলাই) সকাল থেকে সেই কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সকালে নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কয়েকটি বাজারে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

তবে বরিশালের একমাত্র পাইকারি কাঁচামালের বাজার বরিশাল বহুমুখী সিটি মার্কেটে ১৮০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে কাঁচামরিচ বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বহুমুখী সিটি মার্কেটের দুলাল বাণিজ্যালয়ের মালিক আমিন শুভ বলেন, এক সপ্তাহ ধরেই কাঁচামরিচের মূল্য বৃদ্ধি ছিল। আজ সকাল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি হওয়ায় মরিচের দাম কমেছে।

এখন ইন্ডিয়ান কাঁচামরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা ও দেশী কাঁচামরিচ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা করে বিক্রি করছি। তবে দুই এক দিনের মধ্যে কাঁচামরিচের দাম আরো কমবে।

পাইকারি কাঁচামালের বাজার বহুমুখী সিটি মার্কেটের শাহারিয়া বাণিজ্যালয়ের ম্যানেজার রাশেদুল আলম বলেন, কাঁচামরিচের পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ না থাকায় ৬ থেকে ৭ দিন ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

আজ সকাল থেকে আড়তে ইন্ডিয়ান কাঁচামরিচ ঢুকেছে, তাই মূল্য কমে ২০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে পাইকারি বাজার থেকে ২০০ টাকা দরে কেনা মরিচ নগরীর বিভিন্ন খুচড়া বাজারে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে।

নগরীর বাংলা বাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা জাহিদ হোসেন বলেন, পাইকারি বাজার থেকে ২০০ টাকা দরে কাঁচামরিচ কিনে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি না করলে খরচে পোষায় না।

আড়ত থেকে মালামাল আনার খরচ, বাজারে ইজারা খরচ, বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। সে অনুযায়ী লাভ না করলে পোষাবে কি করে।

এদিকে কাঁচামরিচের মূল্য বৃদ্ধির কারণে নগরীর বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালাতে দেখা গেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী জানান, বাজার দর যাতে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে সেজন্য বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, কয়েকটি বাজারে কাঁচামরিচের কেজি ৩৫০ টাকার বেশি বিক্রি করতে দেখা গেছে। তাদেরকে সাবধান করা হয়েছে। পাশাপাশি পাইকারি বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিক্রি করার জন্য বলা হয়েছে।

বেশ কিছুদিন ধরেই সরবরাহ কমে গিয়ে দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। দাম নিয়ন্ত্রণে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে গত কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বশেষ খবর

সর্বাধিক পঠিত