ঝালকাঠিতে ভান্ডারিয়া-বরিশালগামী একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে ১৭ জন যাত্রী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে আটজনই ভান্ডারিয়া উপজেলার। স্বজনদের আহাজারীতে ভারী হয়ে উঠেছে সেখানকার বাতাস।
রোববার (২৩ জুলাই) লাশগুলো জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফর করা হয়। এর আগে শনিবার সকাল আনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের পরিষদ সংলগ্ন একটি পুকুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাস পড়ে যায়।
নিহতের মধ্যে যাদের পরিচয় জানা গেছে তারা হলেন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌরসভার পান্না মিয়ার ছেলে তারেক (৪৫), একই এলাকার মুজাফফর আলীর ছেলে সালাম মোল্লা (৬০), মরহুম সালাম মোল্লার ছেলে শাহীন মোল্লা (২৫), পশারিবুনিয়া গ্রামের জালাল হাওলাদারের মেয়ে সুমাইয়া (৬), ভান্ডারিয়ার রিজার্ভ পুকুরপাড় এলাকার মরহুম লাল মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম (৬০), মরহুম লাল মিয়ার ছেলে আবুল কালাম হাওলাদার, উত্তর শিয়ালকাঠি এলাকার মরহুম ফজলুল হক মৃধার স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৮০), ঝালকাঠির রাজাপুর থানার নিজামিয়া গ্রামের মরহুম মাওলানা নজরুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা বেগম (৪৩) ও তার মেয়ে খুশবো আক্তার (১৭), রাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ি এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে নয়ন (১৬), কাঁঠালিয়া উপজেলার বাশবুনিয়া এলাকার তৈয়বুর রহমানের মেয়ে সালমা আক্তার মিতা (৪২), বরিশালের বাকেরগঞ্জে উপজেলার চর বোয়ালিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ (৮), মেহেন্দীগঞ্জ সদরের রিপনের স্ত্রী আইরিন আক্তার (২২), তার মেয়ে রিপামনি (২)। বাকি তিনজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
এ দুর্ঘটনায় আহত যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার রাসেল মোল্লা, ফাতিমা, রাসেল, মনিরুজ্জামান, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার আকাশ, ঝালকাঠির আল-আমিন, ঝালকাঠির কাঠালিয়ার আবুল বাশার, রিজিয়া, রিজিয়া, আরজু, নলছিটি মিফতা, আজিজুল, ঝালকাঠির রাজাপুরের মনোয়ারা, আলাউদ্দিন, সোহেল, আবুল কালাম, পটুয়াখালী বাউফলের রুকাইয়া, সিদ্দিকুর, ভোলার সুইটি, সাতক্ষীরার সোহাগ, নাঈমুল, বরিশালের সাব্বির।
এছাড়া দু’জনকে বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের নাম-জানা যায়নি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, ‘বাসার স্মৃতি’ নামের বাসটি আজ সকালে ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। পথে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি সদরের ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন ছত্রকান্দা এলাকার একটি পুকুরে বাসটি পড়ে যায়। এতে ওই বাসের ১৭ যাত্রী নিহত হন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সদর হাসপাতালে সর্বমোট ১৭টি লাশ নিয়ে আসা হয়েছে। এদের মধ্যে আটজন নারী, ছয়জন পুরুষ ও তিনজন শিশু। তবে নিহত সবার পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
ভান্ডারিয়া উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চপল হাওলাদার জানান, ভান্ডারিয়া মিরাজুল ইসলাম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশের উদ্যোগে ভান্ডারিয়ার নিহত আটটি লাশ উদ্ধার করে স্ব-স্ব এলাকায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতি লাশ দাফন কাফনের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে প্রদান করেছেন ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম।