পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে নয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল এবং তিনজনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।ভান্ডারিয়া পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে চৌদ্দ দলীয় জোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মনোনীত বাইসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মো: মাহিবুল হোসেন মাহিম, আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফাইজুর রসিদ খশরু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়লা আরঞ্জুমান বানু মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
সোমবার (১৯ জুন) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পিরোজপুর জেলা নির্বাচন অফিস মিলনয়াতনে পিরোজপুর জেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রির্টানিং অফিসার মোহম্মদ জিয়াউর রহমান খলিফা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বাকি নয়জনের তথ্যে নানা ধরনের গড়মিল পাওয়ায় তাদের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন ওই কর্মকর্তা। এ দিকে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে তিনটি ওয়ার্ডে ১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে চুড়ান্ত বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ১৩ জন। বাতিল হয় চারজন এবং সাধারণ কাউন্সিলর সদস্য পদে নয়টি ওয়ার্ডে ৪৭ জন প্রার্থীর মধ্যে চুড়ান্ত বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৪১ জন এবং বাতিল ছয়জন। এদিকে সংরক্ষিত (মহিলা সদস্য) পদে তিনটি ওয়ার্ডে ১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে চুড়ান্ত বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ১৩ জন এবং বাতিল চারজন এবং সাধারণ (কাউন্সিলর) সদস্য পদে নয়টি ওয়ার্ডে ৪৭ জন প্রার্থীর মধ্যে চুড়ান্ত বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৪১ জন এবং বাতিল ছয়জন। নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছিল ৮১টি, জমা পরেছিল ৭৬টি এবং যাচাই বাছাই বৈধ হয়েছেন মেয়র পদে তিনজনসহ মোট ৪৭ জন। বাতিল হওয়া প্রার্থীরা চাইলে আগামী ২৫ জুন জেলা নির্বাচন অফিস বরাবরে আপিল করতে পারবেন। পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের ৬৮টি ভোট কক্ষে ১১ হাজার ২৩৬ জন পুরুষ, ১১ হাজার ১৭৯ জন মহিলা ভোটারা আগামী ১৭ জুলাই ভান্ডারিয়া পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট প্রদান করবেন বলে জানিছেন ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রির্টানিং অফিসার মো: জাহেদুর রহমান।
সূত্র জানায়, গত ৩১ মে দীর্ঘ আট বছর পর ভান্ডারিয়া পৌরসভার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভান্ডারিয়া ও মঠবাড়ীয়াসহ দেশের আটটি পৌরসভার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করায় স্ব-স্ব পৌরসভায় আনন্দ উৎসবে মুখরিত হয়ে উঠে। কিন্তু ভান্ডারিয়া পৌরসভায় ব্যতিক্রম চিত্র দেখা দিয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পৌর নির্বাচনের পক্ষে-বিপক্ষে উচ্চ আদালতে মামলা করে।
সূত্র আরো জানায়, পৌরসভার বাসিন্দা আব্দুল হালিম হাওলাদার ভোটার তালিকায় ত্রুটির অভিযোগে রিট করেন হাইকোটে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারহ মাহমুব এবং বিচারপতি মাহবুব উল ইসলাম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৫ জুন ভান্ডারিয়া পৌরসভার নির্বাচন ৪৫ দিনের জন্য স্থগিত আদেশ করেন।
একই আদেশে বলেন, ভোটার তালিকা থেকে মৃত ব্যক্তির নাম ও এক এলাকার ভোটার অন্য এলাকায় প্রবেশ করার বিষয়টি সংশোধন করে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়। পরে ১৮ জুন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন পৌর নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী মাহিবুল হোসেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এক আদেশে বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই সাথে নির্বাচনের ভোটার তালিকা সংশোধনের নির্দেশ সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। ফলে ভান্ডারিয়া পৌর নির্বাচনে বাধা নাই।
এসব ঘটনায় একাধিক পৌর বাসিন্দরা জানান, মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি (জেপি) ও আ’লীগ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পৌরসভাকে বিপাকে ফেলছে।
উল্লেখ্য, উক্ত ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি বা জামায়াতের কোনো প্রার্থী না থাকায় পৌরবাসীর মধ্যে সর্বদলীয় নির্বাচনী উৎসব নেই।