রাজধানীর মতিঝিলে মিষ্টির প্যাকেটে দেড় কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার সময় গ্রেফতার হয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালকের (মানিলন্ডারিং) পিএ গৌতম ভট্টচার্য।গ্রেফতারকৃতরা হলেন দুদক মহাপরিচালকের (মানিলন্ডারিং) পিএ গৌতম ভট্টচার্য, চাকরিচ্যুত পুলিশ কনস্টেবল মো: এসকেন আলী খান, হাবিবুর রহমান ও পরিতোষ মণ্ডল।
শুক্রবার মতিঝিলের একটি হোটেল থেকে চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি মিষ্টির প্যাকেট, নগদ দেড় লাখ টাকা, চারটি মোবাইল ফোন, দুদকের মনোগ্রাম দেয়া খাকি রঙের একটি খাম ও দুদকের একটি নোটিশ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ভুয়া অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে দুদকের নামে চিঠি ইস্যু করে তাকে হয়রানি করা হচ্ছিল। এ চক্রে আছেন দুদকের মহাপরিচালকের পিএ, পুলিশ সদস্য (বরখাস্ত) এসকেন আলী খান ও দুই দালাল হাবিবুর রহমান, পরিতোষ মণ্ডল।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকার সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী আশিকুজ্জামান। বায়তুল মোকাররম মসজিদের কার্পেটের দোকানে আমদানি করা কার্পেট ও জায়নামাজ সরবরাহ করেন। ১৯ জুন তার স্ত্রী সন্তান প্রসব করার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন সকালে আশিকুজ্জামানের বাসায় দুদুকের মনোগ্রাম সম্বলিত খাকি রঙের খামে একটি নোটিশ নিয়ে যান একজন অফিসার। তার (আশিকুজ্জামান) বিরুদ্ধে অভিযোগ, কার্পেট ব্যবসার আড়ালে স্বর্ণের চোরাচালান এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ তোলা হয়।
স্ত্রী হাসপাতালে, এ অবস্থায় দুদকের এ অভিযোগ শুনে ঘাবড়ে যান আশিকুজ্জামান। তখন দুদকের কথিত অফিসার একটু সহানুভূতি দেখানোর ভান করে আশিকুজ্জামানকে মোবাইল বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপনে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
হারুন বলেন, চক্রের সদস্যরা ব্যবসায়ী আশিকুজ্জামানকে ডিবি, সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক এবং এনএসআইয়ের ভয় দেখিয়ে বলে আপনার দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে সংস্থাগুলো হন্য হয়ে খুঁজছে। দুদক এরইমধ্যে দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আমলে নিয়েছে। এসময় নোটিশ বহনকারী ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আশিকুজ্জামানকে কথা বলিয়ে দেন।’
‘হোয়াটসঅ্যাপে দুদকের ওই কর্মকর্তা মোবাইলে কথা বলা সমীচীন নয় জানিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য দুদক অফিসে স্বশরীরে হাজির হতে বলেন।’
তিনি বলেন, ভিকটিম বিষয়টি গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগকে অবহিত করলে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ দুদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং দুদকের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলামসহ হোটেল হিরাঝিলের আশেপাশে অবস্থান নেয়।
সমঝোতা অনুসারে ভিকটিম আশিকুজ্জামান চারটি মিষ্টির প্যাকেটে দেড় লাখ টাকা ভরে হোটেলে যান। বাকি টাকা ব্যাংকে দেবেন বলে জানান। তার কাছ থেকে মিষ্টির প্যাকেটে সংরক্ষিত টাকা গ্রহণ করার সময় ডিবি পুলিশ তাদের হাতেনাতে গ্রেফতার করে।