আন্তর্জাতিক

১৫ বছর নির্বাসনে থাকার পর দেশে ফিরেই কারাগারে থাকসিন সিনাওয়াত্রা

থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ১৫ বছর নির্বাসনে থাকার পর মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) তিনি দেশটিতে ফিরে আসেন এবং এরপর তাকে বন্দি করে কারাগারে পাঠানো হয়।মূলত থাকসিন এমন এক সময়ে ফিরলেন এবং বন্দি হলেন যখন দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সে সংক্রান্ত ভোটাভুটি মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা ১৫ বছর নির্বাসনে কাটিয়ে দেশে ফেরার পর বন্দি হয়েছেন। তবে অনেকে বিশ্বাস করেন যে, তিনি একটি চুক্তি করে দেশে ফিরেছেন যা তাকে বেশি দিন কারাগারে রাখতে পারবে না।

বিবিসি বলছে, ৭৪ বছর বয়সী এই নেতাকে দেশে ফেরার পরপরই সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তাকে আগের তিনটি দোষী সাব্যস্ত হওয়া অপরাধের জন্য আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর তাকে ব্যাংককের রিমান্ড কারাগারে পাঠানো হয়।

সেখানকার কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, বার্ধক্য বিবেচনায় থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে নির্দিষ্ট চিকিৎসা সরঞ্জামসহ আলাদা একটি উইংয়ে রাখা হবে। সেখানে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন, যার প্রথম পাঁচ দিন তিনি তার ঘরেই থাকবেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই থেকে একটি প্রাইভেট জেটে স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় রাজধানী ব্যাংককে অবতরণ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এসময় তার শত শত উচ্ছ্বসিত সমর্থক উল্লাস, বক্তৃতা এবং গান করছিলেন।

এছাড়া থাকসিনের প্রত্যাবর্তনের এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে তার দলের শক্ত ঘাঁটি থেকে অনেকেই রাতারাতি ব্যাংককে চলে আসেন। কিন্তু থাকসিন তাদের শুভেচ্ছা জানাতে পারেননি। দুই মেয়ে এবং ছেলেকে পাশে নিয়ে তিনি বিমানবন্দর টার্মিনাল থেকে অল্প সময়ের জন্য বের হন এবং রাজা ও রানির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।

সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশে ফেরার পর থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। মূলত তার অনুপস্থিতিতে দেওয়া কারাদণ্ডের বিষয়ে কী করা হবে তা সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরে তাকে বন্দি করার খবর পাওয়া যায়।

মূলত দেশে ফেরার পর আদালতে থাকসিনকে ক্ষমতার অপব্যবহার ও আরও বেশ কয়েকটি ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। তবে সাবেক এই থাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সফল এই নির্বাচিত নেতাকে দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণশীল রাজকীয়রা ভয় পেয়ে এসেছে। থাকসিনকে দুর্বল করার জন্য সামরিক অভ্যুত্থান এবং বিতর্কিত আদালতের মামলাগুলোকে তারাই মূলত সমর্থন যুগিয়ে এসেছে।

এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এই পরিস্থিতিতে থাকসিনের দেশে প্রত্যাবর্তন ও আটক করে করাগারে পাঠানোয় পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট খবরগুলো

Back to top button