বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা: জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ‘লাইলাতুল আদালতে’ রায় দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকারের মিডল স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে পতন ঘটানো হবে। আপনাদেরকে নো বলে কিংবা এলবিডব্লিউ দিয়ে আউট করা হবে না; বরং মিডল স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে পতন ঘটানো হবে।রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা নিয়ন্ত্রিত আদালত কর্তৃক দেয়া রায়ে আমি বিস্মিত নই। কারণ চাঁদাবাজ কাউকে মসজিদের ইমাম বানালে চাঁদাবাজির কাজই বেশি হবে। সন্ত্রাসী কাউকে স্কুলের শিক্ষক বানালে সেখানে গণিত, ইংরেজির দিকে গুরুত্ব থাকে না। কারণ দেশ চালাচ্ছে কারা?
বিএনপি নো বলে আওয়ামী লীগকে আউট করতে পারবে না মর্মে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার বিকেলে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এই মন্তব্য করেন। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা: জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আদালতের দেয়া রায়ের প্রতিবাদে চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণীর বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা: হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা: মো: মেহেদী হাসানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ড্যাবের মহাসচিব ডা: মো: আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা: জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা: পারভেজ রেজা কাকন, অধ্যাপক ডা: সিরাজুল ইসলাম, ডা: এএসএইচ পারভেজ, অধ্যাপক ডা: মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা: আবুল কেনান, ডা: শহিদুল ইসলাম বাবুল, ডা: মনোয়ারুল কাদির বিটু, ডা: নিয়াজ শেখ রানা, ডা: আদনান হাসান মাসুদ, ডা: এরফানুল হক সিদ্দিকী, ডা: মো: ইয়াহিয়া, ডা: আবু নাসের, ডা: এম এ কামাল, ডা: এসএম মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গণি চৌধুরী, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, বিএমএ‘র সাবেক সভাপতি ডা: একেএম আজিজুল হক, সাবেক মহাসচিব ডা: গাজী আব্দুল হক, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, এগ্রিকালচারিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এ্যাবের কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, নার্সেস এসোসিয়েশনের জাহানারা সিদ্দিকী, তাঁতীদলের কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
তিনি বলেন, এই শেখ হাসিনা তো রাতের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। মানুষ বলাবলি করেন লাইলাতুল ইলেকশন করেছেন। এখন লাইলাতুল আদালত কর্তৃক রায় দেয়া হচ্ছে। সাগর রুনির বিচারের শুনানি ৯৯ বার পেছানো হয়েছে। আর তারেক রহমানের রায় তো দ্রুত গতিতে দেয়া হয়েছে। সেই রায় আগেই লেখা ছিলো। সেজন্যই আমি বিস্মিত নই।
রিজভী বলেন, তারেক রহমান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে। তিনি তো গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর তার দুর্বল জায়গা তার সহধর্মিণী। সেজন্যই তাদের বিরুদ্ধে সাজা দেয়া হয়েছে। কারণ শেখ হাসিনা ক্যালকুলেটেড ফ্যাসিস্ট। যারা ফ্যাসিস্ট তাদের কাছে ভালো কিছু আশা করা যায় না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে টার্গেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি এভাবে তার পায়ের নিচের মাটি সরিয়ে ফেলেছেন। জনগণ কিন্তু এগুলো আর ভালোভাবে নেয়নি।
রিজভী আরো বলেন, শেখ হাসিনা তার রাষ্ট্রযন্ত্রের মাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার করতে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু প্রযুক্তির নানা মাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য জনগণের কাছে পৌঁছে গেছে। মানুষ আজ জেগে উঠেছে। তারা ইট কাঠ পাথর কংক্রিট উপেক্ষা করে সর্বোচ্চ আওয়াজ দিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। এতো হামলা মামলা নির্যাতন করেও কিন্তু তাদের দমাতে পারেনি। বিএনপির এতো জনসমর্থনই হলো শেখ হাসিনার ভয়ের কারণ। তবে বেশিদিন আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অনুসারী কোনো লোক বিচারের দায়িত্বে থাকলে তার কাছে তো ন্যায়বিচার পাওয়া যায় না। তিনি তো শেখ হাসিনার নির্দেশে রায় দেবেন। আজকে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ শেখ হাসিনার চেতনায় উদ্বুদ্ধ। আজকে অনেকেই বলছেন, ডা: জুবাইদা রহমান তো রাজনীতি করেন না। তো মামলা কেনো? অতীতে ড. ইউনূস, ব্যারিস্টার রফিকুল হক এদের ঘটনা তো সবারই জানা! সুতরাং তারেক রহমান ও ডা: জুবাইদার বিরুদ্ধে রায় শেখ হাসিনার আক্রোশের প্রতিফলন। আমি এই রায় অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। না হলে আপনি যে অন্যায়গুলো করছেন পার পাবেন না।