আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মির্জা ফখরুল আজকে কি বলেছে? বলেছে, পদযাত্রা-বিজয়যাত্রা। আসলে পরাজয় যাত্রা, পতন যাত্রা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি দিয়ে গেছে? তত্ত্বাবধায়ক দিয়েছে? সরকারের পদত্যাগ? শেখা হাসিনার পদত্যাগ। কোনোটাই পাননি। পেয়েছেন হাসের ডিম, ঘোড়ার ডিম। তিনি বলেন, এরা মনে করেছে ২০০১ সাল আর ২০০৬ সালের মতো তাদের দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আসবে। জিতে যাবে। বিএনপির সেই আশায় গুড়েবালি। তত্ত্বাবধায়ক আদালত মেরে ফেলেছে। আমরা কিছুই করিনি। বাতিল করেছে উচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের সামনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি উন্নয়ন ও শোভাযাত্রা উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, আমেরিকানরা আসছে, ভেবেছে সংলাপ করতেই হবে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবে। কিছুই হলো না। আমেরিকানরাও দিয়ে গেল ঘোড়ার ডিম তত্ত্বাবধায়ক হবে না। পার্লামেন্টের বিলুপ্তি হবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার প্রশ্নই আসে না। দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতোই শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো লাভ হবে না। আমরা আমেরিকা ইউরোপিয়ানদের কাছে বলেছি, আমরা শান্তি চাই। তত্ত্বাবধায়ক কেউ চায় না। চায় শুধু বিএনপি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আইন মানে না। বিচার মানে না। নিজেদের পক্ষে না এলে কিছুই মানে না। বিএনপি মার্কা তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরাও মানি না। আমাদেরও দফা আছে। আমাদের দফা বাংলাদেশের সংবিধান। সংবিধানে যা লেখা আছে আমরা সেটাই করবো। নির্বাচন কমিশনও সংবিধান অনুযায়ী চলবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর পার্টি, শেখ হাসিনার পার্টি। কারো কাছে মাথা নত করে না।লুটপাটের বিরুদ্ধে, অর্থ পাচার, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে যত শয়তানের দল আছে সবার আসল ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। প্রথমে দল ছিল ৫৪। এরপর ৩৬। আবার বলে ৩৭। দলের ঠিক নাই। দফা একটা। আবার বলে ৩২টা। দফার কোনো ঠিক নাই। মেরামত আপনাদের করতে হবে না। বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়েছেন। এটাই আপনাদের মেরামত।
তিনি বলেন, শত ভাগ বিদ্যুৎ আওয়ামী লীগ দিয়েছে। বিশ্ব সংকটের কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। এখন আর সমস্যা নেই। জিনিস পত্রের দাম বেড়েছে। শেখ হাসিনা পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতি আস্তে আস্তে কমে যাবে। বিএনপি ঘোড়ার ডিম ছাড়া কিছুই দিতে পারবে না।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দুই মাসের মধ্যে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। একদিনে শেখ হাসিনা একশটি সেতু উদ্বোধন করেছেন। বিএনপির আছে কিছু? ফখরুল সাহেব, কি দেখিয়ে ভোট নেবেন? আপনাদের আছে শুধু অন্তর্জালা। সামনের কয় মাস উদ্বোধন আর উদ্বোধন। গাজীপুরের বিআরটি উদ্বোধন। কাওলা থেকে উত্তরা, তেজগাঁও রেলস্টেশন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন হবে। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র নদীর তলদেশের টানেল শেখ হাসিনা অক্টোবরে উদ্বোধন করবেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সতর্ক থাকবেন, ধৈর্য্য ধরবেন। তারা বুঝে গেছে আগামী ইলেকশনে জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই। বিএনপি বুঝে গেছে গতবারের মতো এবারও হারবে। ত্রিশটা সীট আপনারা ২০০৮ সালে শেখ হাসিনাকে দিয়েছিলেন। কিন্তু পেয়েছেন আপনারাই। এই দল ভুয়া। সব দফা ভুয়া, জোট ভুয়া, আন্দোলন ভুয়া। এই ভুয়া আন্দোলনের পরাজয় অনিবার্য। ২০৩০ সালের মধ্যে বিএনপি নাকি ডিজিটাল বাংলাদেশ করবে। তাদের সেই স্বপ্ন ডীপ ফ্রিজে আবদ্ধ হয়ে আছে। কারণ জানে যে করতে পারবে না। হাতি ঘোড়া গেল তল, ভেড়া বলে কত জল। বিএনপির অবস্থাও তাই। নিজেরা নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। নেত্রীর পক্ষ থেকে সারা বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের অনুরোধ করছি। জয় যাত্রা, মহিলা সমাবেশ, তারুণ্যের সমাবেশ চলবে।
দেশে পরিস্থিতি যত শান্তিপূর্ণ থাকবে আমাদের তত লাভ। বিশৃঙ্খলা তারাই করতে চায় যারা ইলেকশনে হেরে যাবে। পরিবেশ যত শান্ত থাকবে আমাদের তত সুবিধা। কারও উস্কানিতে সাড়া দেবেন না। গায়ে পড়ে ঝগড়া বাধাবে। সাড়া দেবেন না। ভরা কলসি নড়ে না। নড়ে খালি কলসি। বিএনপির কলসি খালি। শেখ হাসিনার কলসি উন্নয়নের কলসি। নড়ে না। কাউকে কিছু বলবেন না। কেউ অন্যায় করলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আছে। পরিস্থিতি বলে দেবে আমরা কি করবো।
মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন মায়া বীরবিক্রম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম , সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ।