জাতীয়প্রধানমন্ত্রী কর্নার

আলতু-ফালতু লোক দলে ঢোকালে চলবে না,তাতে দেশের বদনাম : ছাত্রলীগকে শেখ হাসিনা

ছাত্রলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্রুপ বাড়ানোর জন্য আলতু-ফালতু লোক ঢোকানো যাবে না। তাতে নিজেদের বদনাম, দলের বদনাম, দেশের বদনাম। 

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বুধবার ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় একথা বলেন ছাত্রলীগের ‘সাংগঠনিক নেত্রী’ শেখ হাসিনা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

সমালোচনায় গা না দিতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আমি জানি ছাত্রলীগ সম্পর্কে অনেক কথা লেখা হয়। এতবড় একটা সংগঠন আর আমরা ক্ষমতায় আছি বলে অনেকেই ভেতরে ঢুকে যায় এবং নিজেরাই গোলমাল করে, বদনামটা পড়ে ছাত্রলীগের ওপর।

“আমাদের পেছনে লোক লেগেই আছে এবং লেগেও থাকবে। ছাত্রদল কত অপকর্ম করে গেছে, সেটা নিয়ে কথা নেই। কিন্তু ছাত্রলীগের একটু কিছু হলেই বড় নিউজ। সেজন্য নিজেদেরই ঠিক থাকতে হবে।”

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে কাজ না করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “চাওয়া-পাওয়ার উর্ধ্বে উঠে ত্যাগ স্বীকার করে এগুতে পারলে সঠিক নেতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা যায়। কিন্তু গড্ডালিকা প্রবাহে অর্থ সম্পদের পেছনে ছুটলে ওই অর্থ সম্পদেই ভেসে যেতে হয়। তাতে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতাও থাকে না, দেশ এবং মানুষকেও কিছু দেওয়াও যায় না।”

ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মানব সেবার পাশাপাশি লেখাপড়ায় জোর দেওয়ার পরামর্শও দেন প্রধানমন্ত্রী।

“ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি আমি চাই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসবে এবং সেজন্য আমাদের আজকের প্রজন্ম বা প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিজেদেরকে প্রস্তুত করবে। এখন তথ্যপ্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের যুগ। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-দীক্ষায় উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। কেননা দেশ চালাতে গেলে শিক্ষা ও জ্ঞানের প্রয়োজন রয়েছে। তেমনি ইতিহাস জানতে হবে এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হতে হবে।”

পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর দেশে ‘অরাজক’ পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “১৫ অগাস্টের খুনিদেরকে শুধু এদেশে পুরস্কৃতই করা হয়নি, সাতই মার্চের ভাষণকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সাথে স্বাধীনতার পুরো ইতিহাসটা মুছে ফেলে দিয়ে আবিষ্কার হল, এক মেজর হুইসল দিল আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। আর এজন্য সংগ্রামের যে পথ ও ইতিহাস সেটা তাদের জানা নেই।”

ইতিহাস জানতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “ইতিহাস না জানলে শিক্ষা নেওয়া যায় না, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হয়।

“আগামী দিনে চলার পথ তৈরি করতে হয়। যদিও ইতিহাসের একইরকম পুনরাবৃত্তি ঘটবে না, তবে সময়ের বিবর্তনে সেটা আসবে। আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি বলেই আমরা সেটা জানি।”

ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা ছিলেন প্রধান অতিথি।

ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে এই সভায় ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন এবং সাইদুর রহমান হৃদয়, দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান ও জুবায়ের আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জীব চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বক্তৃতা করেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সভা সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুটি প্রকাশনা ‘মাতৃভূমি’ ও ‘জয়বাংলার’ মোড়ক উন্মোচন করেন।

সংশ্লিষ্ট খবরগুলো

Back to top button