ঝালকাঠিবরিশাল

সাগর নন্দিনীর ইঞ্জিন রুমে জমে থাকা গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণ, বলছে তদন্ত কমিটি

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ তেলবাহি জাহাজের ইঞ্জিন রুমে জমে থাকা গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: রুহুল আমিন।

তিনি বলেন, তদন্তে কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে গ্যাস থেকে ঘটতে পারে বলে কয়েকজন বিশেষজ্ঞদের মতামতে উঠে এসেছে। তাছাড়া দগ্ধ শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের মতামত নেয়া হয়েছে। তবে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া জাহাজটির ফিটনেসসহ কাগজপত্রও সঠিক পাওয়া গেছে।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ ও পানি মিশ্রিত তেল অপসরণে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের আট সদস্যের টিম। তারা প্রতিবেদন প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দিচ্ছে। তবে ওই তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত এখনো জানাননি জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম।

জেলা প্রশাসকের গঠন করা কমিটির প্রধান জানিয়েছেন, জাহাজের ইঞ্জিন রুম থেকে হয়তো গ্যাস জমে ছিল, গ্যাস অপসরণের জন্য জেনারেটর চালু করার সাথে সাথেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। চট্টগ্রাম থেকে জ্বালানি নিয়ে আসা ও কয়েক দিন নোঙ্গর করে রাখার ফলে গ্যাসের সৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ ও পানি ও ফোম মিশ্রিত তেল অপসরণের জন্য কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গঠিত ৮ সদস্যের কমিটি। জাহাজটিতে এখনো তিন লাখ ৮৬ হাজার ২৪৯ লিটার পেট্রোল ও ২৮ হাজার ৪৫৬ লিটার ডিজেল রয়েছে বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। তবে দ্বিতীয় দফায় বিস্ফোরণের পর সারারাত তেল থেকে আগুন জ্বালার কারণে তেল পুড়ে গেছে। আর কী পরিমাণ তেল এখনো রয়েছে, তা জানাতে পারেনি পদ্মা অয়েল কোম্পানি ও সাগর নন্দিনী জাহাজ কর্তৃপক্ষ।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট মামুন শিবলী জানান, তেল মিশ্রিত পানি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। জাহাজটি যাতে ডুবে না যায়, সেজন্য ড্রেজার দিয়ে পেছনের অংশ সেচ দেয়া হচ্ছে। তবে তেলের চেম্বারগুলোর উপরের অংশ ফাটা থাকলেও নিচের অংশ অক্ষত রয়েছে।

অপর দিকে নন্দিনী-৪ জাহাজের তেল অপসরণের জন্য নন্দিনী-১ জাহাজ আনা হয়েছে এবং সাগর নন্দিনী-৪ এর দুর্ঘটনা এড়াতে বিস্ফোরক টিম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে পানি ছিটিয়েছে।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো: ফিরোজ কুতুবী জানান, ট্যাঙ্কারটিতে থাকা অবশিষ্ট তেল অপসারণে ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নির্দেশনা ছাড়া তা এখনই অপরসরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ট্যাঙ্কারটিতে পানি উঠে যেন ডুবে না যায়, সে ব্যাপারে তৎপরতা অব্যাহত আছে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুর রহমান জানান, কয়েকটি জাহাজে তেল অপসরণ করা হয়েছে, কী পরিমাণ তেল এখনো আছে, তা বলা যাচ্ছে না। পানি মিশ্রিত তেল পরীক্ষা করে জানা যাবে। উদ্ধারে কমিটি কাজ করছে।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও তদন্ত কমিটি প্রধান মো: রুহুল আমিন জানান, সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ তেলবাহি জাহাজের ইঞ্জিন রুমে জমে থাকা গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে তদন্তকালে জানা গেছে।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া জাহাজটির ফিটনেসসহ কাগজপত্রও সঠিক পাওয়া গেছে। বিস্তারিত জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জানানো হবে বলেও সাংবাদিকদের জানান এডিসি।

সংশ্লিষ্ট খবরগুলো

চাইলে পড়তে পারেন
Close
Back to top button